সিংগাইরে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষককে মারধর, বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সিংগাইরের জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে আব্দুল্লাহ আল রোমান (৩০) নামের এক সহকারী  শিক্ষককে শ্রেনী কক্ষে ঢুকে মারপিট করে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শিক্ষক প্রতিনিধি প্রার্থী মো. করম আলীর সমর্থনকারি হিসেবে ওই শিক্ষকের স্বাক্ষর নিতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।  বিএনপি নেতা ও  জয়মন্টপ ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান খান হাবিবুল আলম মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে বহিরাগত সাদ্দাম,দেলোয়ার,পিন্টু,আতিক,তারা মোল্লা,রাতুল গংরা  মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ।

রোববার (২ নভেম্বর) বলা ১১ টার দিকে জড়িতদের বিচার দাবিতে হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক  অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেওএম তৌফিক আজম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিলে  শিক্ষার্থীরা অবরোধ থেকে সরে দাড়ায়।

এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মহিদুর রহমান বাদি হয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়,বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন ছিলো ৩০ শে অক্টোবর।  ঐ দিন  শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে মো.করম আলীর পক্ষে খান মো.হাবিবুল আলম মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে সমর্থনকারি হিসেবে ক্লাশ চলাকালিন সময়ে ইংরেজি শিক্ষক রোমানের কাছ থেকে জোর পূর্বক স্বাক্ষর আদায়ের চেস্টা করেন। এক পর্যায়ে তাকে মারপিট করে স্বাক্ষর নেন। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভীতির সঞ্চার হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঐ বিদ্যালয়ের কয়েক’শ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল ও  আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ধর্মীয় শিক্ষক হাবিবুল্লাহ ও ক্যান্টিনের দায়িত্বে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী আজিজুল হাকিম পাল জানান,বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে বহিরাগত ২৫-৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ক্লাশ চলাকালিন সময়ে শিক্ষক রোমানকে মারধর করে আহত করেন বলে  তারা জানান।

এ ঘটনায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাদিয়া ইসলাম রিয়া,রিমি আক্তার,সোনিয়া,আসিফ ইকবাল, রাতুল,অনিক,অজয় ক্ষোভের সাথে বলেন,আমাদের স্যারকে যারা মারধর করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার না হলে কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক প্রতিনিধি প্রার্থী মো.করম আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষককে মারধরের কথা অস্বীকার করে ব্যস্থতা দেখিয়ে মোবাইলের লাইন কেটে দেন। বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান খান মো.হাবিবুল আলম মোহাম্মদ আলী শিক্ষককে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন,আমি ওই সময়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার ইমেজ নষ্ট করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের একটি গ্রুপ  আমার বিরুদ্ধে এসব বলছে। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জেওএম তৌফিক আজম বলেন,আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছায়া তদন্ত করেছি। মামলার প্রস্ততি চলছে। দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেন তিনি। উল্লেখ্য,শিক্ষককে মারধরকারি সাদ্দাম ও রাতুল   সিংগাইরের চাঞ্চল্যকর আজগর হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *